সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

যাত্রা পথের কাব্য

                  
             আফজাল হুসাইন

পথের সাথে বলতে কথা এসেছি আজ,
পথ ও পথিক জানাই মোদের আজকে কাজ।
আমি এক ভগ্নহৃদয় পথিক হায়,
ধূলিময় এই পথের সাথে বলতে চাই
আমার দুঃখ ভাগ করে নেব ভাই আমার,
তোমার মনের কথা আমি চাহি জানিবার।
বিলের পারে মৃদু পবনে বসিয়া আজ,
শুনিতেছি আমি পথবাণী তবু সে নারাজ।
বলি শুনো পথ, তোমার কি আজ কষ্ট খুব,
বলে সে বেদনা বুকের ভিতর রয়েছে চুপ,
তুমি যে আজকে জিজ্ঞেস করেছ ভাই আমার
হৃদয় খুড়িয়া বেদনা আজিকে একাকার
তাই মোর আজ মনটা বেজার এটাই ভাই,
আমি তবুও আমার কথা শুনাতে চাই।

শুন তবে আমি প্রাচীন কালের কথা শোনায়,
তখন বিশ্বে কোথাও পাইনি গো তোমায়
পথের বেদনা শুনেনা কেউ তা জানে সবে,
পৃথিবীর স্মৃতি পথেই তবু আঁকা রবে।

প্রাচীন তখন সেন রাজারা দেশ চালায়,
আমি তখন সরু পথ রেখা ,এখন নাই
ক্রমোন্নতির শেষাংশে মোর বৃদ্ধকাল,
তোমাকে শোনাব আমার ব্যাথা হে আফজাল।
সেন শাসনে বাংলা জুড়িয়া অত্যাচার,
পতন ঘটাল জগৎ সিদ্ধ সেন রাজার।

বাংলায় এলো তরুণ তুর্কি মুসলমান,
তেজোদ্দিপ্ত ঈমান শক্তি শাসনপ্রান।
শান্তির বাণী ছড়িয়ে পরীল দিগ্বিদিক,
বাংলা বাসীরা হাস্যোজ্জ্বল লাব্বাইক।

তুর্কি শাসন মাঝখানে এলো শাহের কাল,
ইলিয়াস শাহ এলো বাংলায় তুলিয়া পাল।
ইলয়াস  শাহী শাসনের হলো যবনিকা,
হোসেন শাহের দিন বাংলায় অহমিকা।
শুনতে পাও কি পথের কথা নির্ভেজাল?
আমার বুকের রক্ত তটিনী মুছছে কাল।
আফজাল তুমি শুনেছ কি ওই  সুলতানত?
শাহী বাংলা বলিত যাহারে সারা জগৎ?
সে যুগের পথ ,অনেক কথাই বলব ভাই,
বসো দয়া করে আমার পাশের বটছায়ায়।

আফগান এলো, মুঘল এলো এই পথেই,
তাজমহলের স্মৃতির কথা তো ভুলে গেলেই!
অনেক গোপন কথা আছে তুমি জানতে না,
তোমাকে জানাই,আর কেউ তাহা জানবে  না।

¶ আকাশ বড়ই মেঘ জমেছে  আজকে যাই,
¶ বৃষ্টি হবে না বসো প্রিয় আমি ব্যাথা শুনাই।
কত  যে আমি খুন দেখিয়াছি বলব কী
মানব জাতির বলিতে চাই আমি ছি ছি ছি

-সবাই তোমারে পথ ডাকে তব নাম কি ভাই?
-আমি তাই খুশি লোকে যাহা ডেকে শান্তি পায়।
-তুমি কী কখনো ঘুমাওনি এই হাজার সন?
-পথ ঘুমালে তো দিক হারা হবে রাজার কন।
দিকপাল দিশেহারা ছুটে দিগ্বিদিক
নগর জ্ঞানীরা ভুলবে তাহারা না-গরিক।
শোন হে যুবক পথ কথনও ঘুমায় না,
অবহেলা করে দায়িত্ব জ্ঞান শোনায় না।
আমিও দেখেছি শাসন ত্রাশন বিনাশী প্রাণ,
মুঘল দেখেছি বাবর হুমান  শাহ-জাহান।
যুদ্ধ দেখেছি দেখেছি প্রিয়ার গোলাপ মুখ,
মিলনের রাতে প্রিয়জন তরে উতলা বুক,
পলাশীর ডাকে সিরাজের দলে প্রেমিক তার
মেরেছে তাহারে মির জাফরের ত লোয়ার।
মৃত্যুর কালে বলিল ওরে গোলাপ জান,
সত্যের তরে প্রিয় তোমার দিয়েছে প্রাণ।
ভেবেছ এটাই ব্যাথা মোর মনে আছে জমা?
শুন আমি আজ কিভাবে করিব কারে ক্ষমা?

আমার এই বুকে সিরাজদলার রক্ত পা,
আঁকা আছে আজও মহা ঘাতকের ছুরার ঘা।
বাংলা সেদিন কোথায় ছিল বল আমায়,
সত্য সিরাজ মারা পরে গেল নির্দ্বিধায়,
সত্য সেদিন কোথায় ছিল লুকিয়ে কোল,
বলিল না কেন সিরাজ সত্য সবাই ভুল?

আমি কাদি একা সহস্র কাল জাগিয়া রোজ
কাঁদে মোর সাথী অসথ বট এর ঘন সবুজ ।
বল আফজাল বিশ্বাস করা কি বিশ্ব পাপ?
বিশ্বাস করে মুর্শিদকুলি হলো নবাব,
সেই বিশ্বাসে সিরাজ করেছে সেনাপতি,
মীরজাফরের বিশ্বাস করে হল ক্ষতি
বিশ্বস্ততা যখন রচিবে রাজনীতি
বিষ হবে সেই সময়ের সব প্রেম_ প্রীতি।
কৃষ্ণ নিশুতি পলাশীর রণ দামাম,
ইংরেজ আর কৃষ্ণ নগর জাগে তামাম।
কচুকাটা হয় ইংরেজদের মিথ্যাচার,
তখনই ঘোষণা নয়কো এখন যুদ্ধ আর।
সিরাজ বাহিনী পাগলের মত রণবিজয়,
করিতে চলিলে মীরজাফর আর যুদ্ধ নয়
বলিয়া থামাল সিরাজ বাহিনী স্বার্থপর,
বাংলা বেচিয়া ঘৃণ্য মানব মির জাফর।
মহোনলালের কণ্ঠ শুনেছি বারংবার,
বলেছে অস্ত্র চালান আমরা লোড়ি এবার
বিশস্ত এই সেনানায়কের কথায় হায়,
সর্থপরেরা বলিছে দারিয়া রও হে ঠাঁয়!
মীরজাফরের কূটচালে সেই পলাশী মাঠ,
আজও কাঁদে আমি  শুনি তাদের আর্তনাদ।
মোহন লাল তো আমার প্রিয় যুদ্ধবীর
হিন্দু এ ভাই উচ্চে থাকুক তাহার শির।
বাংলায় গেল ডুবিয়া অর্ক স্বাধীনতা
ইংরেজ এসে কচুকাটা করে মানবতা।
আমি সেই যুদ্ধের এক সৈন্য ভাই,
আমার উপর রক্ত ঝরেছে অঝোরে হায়!

পাল দেখেছি সেন দেখেছি ও মুসলমান,
দেখেছি নিরীহ মানুষ  ও তাদের জীবনদান।
বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের কূটচালে,
বাংলার মুসলিম রাজ গেছে হেলে।
ইংরেজদের দুষাসনে বাংলা হায়,
ধনভাণ্ডার শূন্য ও শান্তি হারায়।

এই শাসনের মাত্রা jogiche নীলের চাষ,
বাংলা চাষার গলায় নেমেছে ভয়াল ফাঁস।

তখন তেরশ বিয়াল্লিশী সন চলে,
মুবারক শাহ নিজেরেই রাজা বলে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ